Islam
একজন দাইয়্যূস এবং বোনদের জন্য কিছু নাসিহা..
দাইয়্যূস!
যিনি সারাবছর ইবাদাত করেও জাহান্নামি!🥺
এ ব্যাপারে ইবনুল কায়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেন,
"দাইয়্যুস হচ্ছে আল্লাহ'র নিকৃষ্ট সৃষ্টি এবং তার জন্য জান্নাত হারাম করা হয়েছে কেননা তার মধ্যে থেকে 'গীরাহ'-বোধ হারিয়ে গেছে।"
একজন ব্যক্তি ৫ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, সিয়াম পালন করে, যাকাত দিয়ে, হজ করেও দাইয়্যুস হতে পারেন। এই উদাহরণ আমাদের আশেপাশেই ভুরি ভুরি আছে।
ভাইয়েরা আপনারা যারা নিজেদের স্ত্রীদেরকে পরপুরুষের চোখের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করছেন, স্ত্রীদের ছবি ফেইসবুকে দিয়ে সবাইকে দেখাচ্ছেন, স্ত্রীকে সাজিয়ে নিয়ে বাইরে বের হচ্ছেন আর পরপুরুষ ও লম্পটরা চোখকে পরিতৃপ্ত করছে সেসব প্রত্যেক পুরুষের “দাইয়্যুস” টার্মটির ব্যাপারে জ্ঞান থাকা আবশ্যক। একজন পুরুষ হাদিসের ভাষ্যমতে দাইয়্যুস সাব্যস্ত হবে যদি সে তার মা, বোন, স্ত্রী, কন্যাদের বেপর্দাভাবে চলাফেরা করাকে বন্ধ না করে, তাদেরকে অশ্লীলতা, ব্যভিচার থেকে দূরে না রাখে। যেসব ভাইয়েরা এখনও দাইয়্যুসের কাতারে আছেন আজই তাওবা করুন, নিজের পরিবারের মহিলাদের বুঝান, দাওয়াহ দিন। তারপরও না বুঝলে বাধ্য করুন, কেননা তাদের ব্যাপারে আপনি জিজ্ঞাসিত হবেন। এমনকি আপনার জান্নাত জাহান্নামও অনেকাংশে তাদের উপর নির্ভর করছে। কারণ তারা আপনার অধিনস্ত।
রাসুলুল্লাহ(ﷺ)বলেছেন-
“তিনজন আছেন যাদের দিকে আল্লাহ সুবহানু তা'য়ালা কিয়ামাতের দিন নজর দেবেন না। যে পিতামাতার অবাধ্য, যে নারী বেশভূষায় পুরুষের অনুকরণ করে এবং দাইয়্যুস ব্যক্তি।”
-- [সুনান আন নাসাঈ: ২৫৬২, হাদিস সাহীহ]
ইমাম আহমাদের বর্ণনাকৃত অন্য আরেকটি সাহীহ হাদীসে ‘আল্লাহ নজর দেবেন না’ এর সাথে এসেছে দাইয়্যুস ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। [মুসনাদে আহমাদ]
রাসুলুল্লাহ(ﷺ) আরও বলেছেন-
“আল্লাহ প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্যে তার অংশের অনিবার্য জিনা লিখে রেখেছেন, হোক সে তার ব্যাপারে জ্ঞাত বা অজ্ঞাত। চোখের জিনা হল দৃষ্টিপাত করা (যে দিকে বা যার দিকে দৃষ্টি দেবার অনুমতি নেই সেদিকে দৃষ্টিপাত করা), জিহ্বার জিনা হল উচ্চারণ করা (যা উচ্চারণ করা বা বলা বৈধ নয়)। আর নফসের ইচ্ছা জাগে (জিনার জন্যে) এবং গুপ্তাংগ তা বাস্তবতায় রূপ দেয় অথবা তা অস্বীকার করে।“
--[সাহীহ বুখারীঃ ৬৬১২]
আপনার বউকে সবাই দেখবে- আর এতে আপনার মোটেও খারাপ লাগবে না তবে আপনি অসুস্থ।
একজন আত্মমর্যাদা পুরুষ কখনই স্ত্রীকে খোলা চলতে দিবে না। অবশ্যই সে তার আত্মমর্যাদার কারনে বাধ্য করতে পারবে ।
আল্লাহ তা'আলা বলেন:-
‘হে নবী! আপনি আপনার স্ত্রীদের, আপনার কন্যাদের ও মুমিনদের নারীদের বলুন, তারা যেন তাদের জিলবাবের একাংশ নিজেদের (মুখের) উপর নামিয়ে দেয়।’
--(-সূরা আহযাব : ৫৯)
‘জিলবাব’ অর্থ বড় চাদর, যা দ্বারা মুখমন্ডল ও পূর্ণ দেহ আবৃত করা যায়।-(আলজামি লিআহকামিল কুরআন, কুরতুবী ১৪/২৪৩)।
উলামায়ে কিরামের মতে মুখের জিনা, চোখের জিনা, হাতের জিনা, পায়ের জিনা সবই জিনার দরজা আর অনস্বীকার্য অংশ। অতএব যে ব্যক্তি তার স্ত্রীকে এইসব জিনা থেকে বাধা দেবে না, সে ব্যক্তিও দাইয়্যুসের কাতারে পড়ে যাবে। আপনি পরিবারের কর্তা হয়ে থাকলে পরিবারের সকলকে পর্দা করতে বাধ্য করা আপনার উপর জরুরি। মা বা বড় বোনকে সর্বোচ্চ বুঝাতে পারবেন এবং দাওয়াহ দিতে পারবেন, ছোট বোন বা স্ত্রী থাকলে শুরুতে নম্র ভাষায় দাওয়াহ দিয়ে বুঝাতে হবে, কাজ না হলে বাধ্য করতে হবে। মনে রাখবেন আপনার জান্নাত জাহান্নাম এর উপরই নির্ভর করছে।
বোনদের জন্য নাসিহাঃ
1) মেয়ে হতে পারে বাবা-মায়ের জন্য জান্নাত বা জাহান্নামের রাস্তা।
বোন তুমি তোমার বাবা মায়ের জন্য কি হতে চাও?
2) বোন তুমি তোমার বাবা মায়ের প্রতিদান কিভাবে দিতে চাও জান্নাতের দিকে এগিয়ে নাকি জাহান্নামের পথে নিয়ে গিয়ে?
3) দুনিয়ার সামান্য আগুনে দগ্ধ ভাবে নিজের মা-বাবাকে দেখার সাহস তোমার নাই।
তাহলে ৭০ গুন বেশি জ্বালাময় জাহান্নামের অগ্নি সাগরে নিজেকে ও বাবা মাকে দেখার সাহস তুমি রাখো কি করে বোন??
4) বোন তুমি যতটা বেপর্দা হচ্ছো তোমার বাবা ঠিক ততটাই দাইয়্যুস হচ্ছে।
তুমি তা যেনেও বেপর্দায় চলো তবে কি তুমি তোমার বাবাকে জাহান্নামে দেখতে চাও??
5) বড় একটা যান্ত্রিক বাস তোমায় দশ মিনিট বহন করে দশটা টাকা বিনিময় নেয়।
কিন্তু বোন তোমার রক্তে-মাংসে গড়া বাবা সারা জিবন তোমায় বহন করেও তো কোনো বিনিময় নেননি।
তাকে তুমি প্রতিদানে জাহান্নামে নিতে চাও?
6) বোন হাজারো বাবা আছে যারা জানেন না দাইয়্যুস মানে কি?
কিন্তু বোন তুমি তো জানো, না জানলেও আজ তো জানলে।
এর পরেও কি নিজেকে এবং নিজের বাবা কে জাহান্নামের ভংকর আজাব থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করবে না?
"যে ভুল করে সে মানুষ, যে ভুলের উপর স্থির থাকে সে শয়তান।
আর যে ভুল করার পর আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় সে মুমিন।"
“বান্দা যখন অপরাধ স্বীকার করে এবং তাওবা করে তখন আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন।”
-সহীহ বুখারী
Collected