*/

*/

Source

যারা ভাবছেন যে মামুনুল হকের দুশ্চরিত্র জনসম্মুখে উন্মোচন করে দিলেই তার গ্রহনযোগ্যতা নষ্ট হয়ে যাবে, তারা রাজনীতির গভীর পাঠ খেয়াল করছেন না।
মামুনুল হকরা কী করে, না করে তার অনুসারীরা ভালোভাবেই জানে। ১২/১৭ জন কর্মীর কবরের মাটি শুকানোর আগেই এরা বান্ধবী বা তথাকথিত দ্বিতীয় বউ নিয়ে রিসোর্টে যায়, এতে তাদের অনুসারীদের কিছুই যায় আসে না। এদের কাছে নারীর কোনো সম্মান নেই, তাই প্রথম বউয়ের অনুমতি না নেয়া অথবা গোপনে কাগজপত্র ছাড়া বিয়ে করা যে বেআইনি এসবকে এরা কোনো ইস্যুই মনে করে না। এদের অনুসারীদের অনেকেই ডাইরেক্ট এদের ভিকটিম, ছোটবেলা পায়ূ নির্যাতিত কিংবা শারিরীক ভাবে নির্যাতিত এসব অনুসারীরা একই সাথে লূত ( আঃ) এর কওমের ইতিহাসও পড়ে, ইসলামে এরকম নির্যাতন নিষিদ্ধ সে জ্ঞানও লাভ করে কিন্তু আবার তাদের নেতাদের অনুসরনও করে।

এর পেছনের রাজনীতিটা মূলত বিপ্লবের স্বপ্ন। মামুনুল হকরা এদের সামনে নতুন স্বপ্ন নিয়ে হাজির হয়েছে। এরা টের পেয়েছে যে এনার্কি তৈরি করতে পারলে, শক্তি প্রদর্শন করতে পারলে এরাও ক্ষমতার অংশীদার হতে পারে।

এই যে লাখো লাখো মাদ্রাসা ছাত্র, এদের কোনো ব্যবহারিক বিদ্যা নেই, তাই এদের সামনে কোনো আশাবাদের কিছু নেই। এদের অধিকাংশই কোনো এক গ্রামের মসজিদে দুই হাজার টাকা বেতনের মোয়াজ্জিন হিসেবে মানুষের বাড়িতে খেয়ে আর মানুষের হাতের দিকে তাকিয়ে জীবন পার করে দেবে। জেনেটিক্যালি কয়েক প্রজন্মের অপুষ্টি, প্রায় বন্দি ও নির্যাতিত শৈশব, নানামুখি বিদ্যা অর্জনের প্রতিবন্ধকতা এদেরকে মানসিক ভাবে পুষ্ট মানুষ তৈরি করতে পারে নি। খেয়াল করে দেখবেন যে এদের সামনে যখন কোনো ওয়াজিয়ান ওয়াজে বলে, আমি ৩টা পিএইচডি করেছি কিংবা বলে যে অক্সফোর্ডের সেরা শিক্ষক হয়েছি কিংবা বলে এন্টারকটিক মহাদেশকে লুকিয়ে রাখা হয়েছে-এরা এইসব গালগল্প অবলীলায় বিশ্বাস করে। এসবকে প্রশ্ন বা অবিশ্বাস করার মতো বুদ্ধিজ্ঞান এদের নেই। এই দোষ তাঁদের না, এই দোষ বাদবাকি মানুষদের, যারা দিনের পর দিন প্রশ্রয় দিয়ে এসব নিন্দার্থাল টাইপ মানুষ তৈরি করতে সহায়তা করেছেন। সুতরাং এরা কী বিশ্বাস করে কি করে না, নেতার সততায় ও নিষ্ঠায় এরা যতই সন্দেহজনক থাকুক, এই নেতাদেরকে অনুসরণ করে দুনিয়াদারির ফুলসিরাত পার হওয়া ছাড়া এদের সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।

এই যে দেশে হাজার হাজার সোকল্ড 'বঙ্গবন্ধু প্রেমী' বের হয়েছে গত ১০ বছরে, এরা যেমন ক্ষমতার লোভ ছাড়া অন্য কোনো কারনেই বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, স্বপ্ন, চিন্তা-কোনো কিছুতেই কমিটেড না; হেফাজতের নেতা এবং তাঁদের অধিকাংশ কর্মীও সেই একই ফর্মুলায় জমি, দান এসবের লোভে হেফাজতি; ইসলাম হেফাজতের সত্যিকারের স্বপ্ন তাদের কারো নেই। এরা তাই একই সাথে ধর্মের পেজ আর পর্ণগ্রাফির পেজ লাইক দিয়ে চলে।

সুতরাং মৌলবাদী রাজনীতির উত্থানকে মোকাবেলা করার জন্য এসব অডিও ফাঁস, এদের মুখোশ উন্মোচন খুব একটা ফলপ্রসূ হবে না।
মৌলবাদ বিরোধী রাজনীতিকে মোকাবেলা করতে হলে মানুষকে কাজ দিতে হবে, এদের জীবন ধারনের জন্য সম্মানজনক ব্যবস্থা করতে হবে।

মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীদেরকে জীবনের মূল স্রোতধারায় নিয়ে আসা, এদেরকে কাজেকর্মে লাগানোটাই হচ্ছে কার্যকর পদ্ধতি।

কিন্তু আমরা জানি, সরকার এই পথে যাবে না। সরকার কুলোটা মুলোটা, মুখের সামনে গাজর আর পাছার পিছে বেত-এই সিস্টেমে এদেরকে পালবে পুষবে। রাজনৈতিক ভাবে কম বুঝা, কম জানা; দানবীয় শক্তির অধিকারী অপরিপক্ষ মস্তিস্কের হাজার হাজার মানুষ থাকা, সরকারের নিজের তখতে তাউশ রক্ষার জন্য আপাত সুবিধাজনক। এই সুবিধা যে চিরকাল থাকবে না, সেটা সরকারও জানে, তাই সরকার এই গেইম কতদিন খেলবে সেটাই দেখার বিষয়।
যতদিন তাঁরা এই গেইম চালু রাখতে চাইবে, ততদিন কে কারে বিয়ে করল কিংবা না করেই রিসোর্টে নিয়ে গেল-এসব নিয়ে সাময়িক হাসিঠাট্টা করা যাবে বটে, কিন্তু আদতে তাতে মৌলবাদী রাজনীতির কচুটাও হবে না!

© Arif jebotik

Report Page